নাটোর ৪ আসনে বিএনপির নবীন প্রবীণের টিকিটের লড়াই?
প্রকাশঃ
নাটোর-৪ আসন (বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর উপজেলা) বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় এলাকা।
নাটোর-৪ ( গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য চারজন প্রার্থীকে সমাবেশ ও গণসংযোগ করতে দেখা গেছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রঞ্জু,অ্যাডভোকেট জন গোমেজ, সহ-সম্পাদক, ধর্ম বিষয়ক,জাতীয় নির্বাহী কমিটি,মামুন মজুমদার, সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক,
তিতুমীর কলেজ ছাত্রদল,সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ,সহ-সাধারন সম্পাদক ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ। নির্বাচনী এলাকায় তাদের সভা-সমাবেশ ও গণসংয়োগ করছেন। সংসদীয় এ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল হাকিম রয়েছেন।
স্থানীয় জনগণ তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোতে মনোযোগী হওয়ার প্রত্যাশা করছেন:
দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ প্রশাসন: প্রতিনিধিরা যেন জনগণের ট্যাক্সের টাকায় উন্নয়নমূলক কাজ করেন এবং কোনো ধরনের দুর্নীতি থেকে বিরত থাকেন।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ: নির্বাচনের সময় দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করা।
জনগণের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ: জনগণের সমস্যা ও চাহিদা সম্পর্কে অবগত থাকা এবং তা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি: স্থানীয় যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।
নাটোরে চারটি সংসদীয় এলাকায় বিএনপির প্রতিটি আসনে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছে। তবে জামায়াতের প্রতিটি আসনে কেন্দ্রীয় থেকে আগেই একক প্রার্থীতা ঘোষণা করেছে দলটি।
এছাড়াও জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের মাঠে গণসংযোগ করতে দেখা গেছে। তবে জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলের নেতা ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের তেমনভাবে মাঠে দেখা যায়নি।
ঈদ উদযাপন করতে অনেকে শহর ছেড়ে নিজ এলাকায় এসেছিলেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে পুরোদমে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে বিএনপি, জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলো। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ছুটছেন নিজ নিজ সংসদীয় এলাকায়। ভোটারদের মন জয় করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যোগ দিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
নাটোর-৪ আসনের ভোটারদের মধ্যে ভোটের আমেজ অনেকটাই তাদের প্রত্যাশা, চাহিদা এবং আস্থার ওপর নির্ভর করে। সাধারণত ভোটাররা যেসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন, তা হলো:
ভোটারদের প্রধান চাহিদা ও প্রত্যাশা
১. ভাল নেতৃত্ব ও মানুষের পাশে থাকা
ভোটাররা এমন নেতাকে পছন্দ করেন যারা তাদের সমস্যা বুঝতে পারে, তাদের পাশে দাঁড়ায় এবং উন্নয়নের কাজ করে। নাটোর-৪ এর ভোটাররা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রতি আস্থা রাখছেন কারণ তারা আশা করেন, এই নেতারা তাদের এলাকার অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন করবেন।
২. অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা
অধিকাংশ ভোটার চান তাদের জীবিকা নির্বাহে সহায়তা হবে। কৃষি প্রধান অঞ্চল হওয়ায়, তারা চান কৃষি উন্নয়ন, সেচ, বাজার ব্যবস্থা ও কৃষকের আয়ের সুযোগ বাড়ানো হোক।
৩. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা
ভোটাররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন চায়। ভালো স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলে তারা ভোট দিতে আগ্রহী হন।
৪. নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা
ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও নিরাপত্তা চান যাতে তারা নির্বিঘ্নে জীবন যাপন করতে পারেন।
৫. দুর্নীতি মুক্ত ও স্বচ্ছ প্রশাসন
ভোটারদের মধ্যে দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব বেশি। তারা চান তাদের প্রতিনিধিরা স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ ও জনগণের সেবা করতে আগ্রহী হোন।
নাটোর-৪ আসনের ভোটাররা সাধারণত উন্নয়নকেন্দ্রিক এবং বাস্তব সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। তারা নেতাদের কর্মদক্ষতা, সংকল্প ও নিষ্ঠা দেখতে চায়। ভোটের সময় তারা মূলত দেখতে চান যে, প্রার্থী তাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে কতটা সৎ ও কাজের জন্য প্রস্তুত। এই কারণে ভোটের আমেজ সাধারণত ‘আস্থা’ ও ‘উন্নয়ন প্রত্যাশা’ নিয়ে গঠিত থাকে।
নাটোর ৪ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪২০৪৭০ জন,
পুরুষ ভোটার:২০৯৬২৬, নারী ভোটার:২,১০,৮৪৩ এবং এইবার বেশিরভাগ যোগ হয়েছে তরুন ভোটার যারা বিগত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাঠে থেকে শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে একটা শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছিলেন, তেমন কিছু তরুন ভোটারের সাথে কথা হলে তারা জানান, " আমরা চাই তরুনরাই সংসদের নেতৃত্ব দিক, কারন বিগত আন্দোলনে তরুনদের ভূমিকায় ছিলো সবচেয়ে বেশি, আর আমরা চাই সব দলই তাদের তরুণ প্রার্থীকে প্রাধান্য দিক, কেননা বেশিরভাগ ভোটারই এখন তরুন"।
উল্লেখ্য, মোজাম্মেল হক নাটোর-৪ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে জয়লাভ করেন। তবে, ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের মো. আব্দুল কুদ্দুসের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।
এইবারের নির্বাচনে অন্যপ্রার্থীদের তুলনায় সবচেয়ে বেশি জনসংযোগ করতে দেখা যাচ্ছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক নেতা মামুন মজুমদার কে, তিনি সকল হাট মাঠ ইতিমধ্যেই চষে বেড়াচ্ছেন এবং তারেক রহমানের ৩১ দফা সম্পর্কে জনগনের মাঝে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন এবং এর ফলে জনগনের মাঝে তার প্রভাব ভালোই লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিশেষ করে তার পাশে নাটোর ৪ আসনের নবীন প্রবীণ ভোটারদের একটা মিশ্রণ ঘটাতে তিনি সক্ষম হয়েছেন।
কেন্দ্রের সাবেক ছাত্রদল নেতা মামুন মজুমদার রাষ্ট্রবার্তাকে বলেন " আমি নমিনেশন চাইবো, দলের সকল কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলাম বিগত দিনে ৭ বার জেল খেটেছি,৩৯১ দিন কারাবন্দী ছিলাম, তবুও দল যাকে ধানের শীষে মনোনয়ন দেবে, তার জন্য আমরা জেলা বিএনপি কাজ করব। অবশ্যই দল যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন