সমন্বয়কদের চাঁদা দাবির খবরে বেদনায় নীল: মির্জা ফখরুল
"তরুণরাই যদি চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ে, তবে ভবিষ্যৎ কোথায়?"— প্রশ্ন বিএনপি মহাসচিবের
জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “সমন্বয়কদের চাঁদা দাবির খবর শুনে আমি বেদনায় নীল হয়ে গেছি।” তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের মাত্র এক বছর পরেই এই চিত্র দেখতে হচ্ছে। যে তরুণরা দেশের ভবিষ্যৎ, তারাই আজ চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ছে। আমরা কি সত্যিই এই পরিণতি চেয়েছিলাম?”
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে যুবদলের ‘গ্রাফিতি আর্টস’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
“হাসিনার বিচার তো কিছুই দেখতে পাচ্ছি না”
সরকার পরিবর্তনের পর এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “এক বছর হয়ে গেল, কিন্তু যারা প্রকাশ্যে হত্যা করলো, তাদের গ্রেফতার করা হলো না কেন? হাসিনার বিচার তো কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।”
সংস্কারে সহযোগিতা দিলেও অগ্রগতি নেই
বিএনপির পক্ষ থেকে সংস্কার প্রক্রিয়ায় সব ধরনের সহযোগিতা করা হলেও সরকার কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। তার ভাষায়, “যত চাপই আসুক, বিএনপিকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্র হোক, দেশের মানুষ জানে কিভাবে লড়াই করে মুক্তি আনতে হয়। একসময় যেমন করেছিলেন, এবারও পারবেন।”
তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশ পুনর্গঠনের চেষ্টা চলছে
মির্জা ফখরুল জানান, “তারেক রহমান চেষ্টা করছেন, কীভাবে বাংলাদেশকে আবার গড়ে তোলা যায়। কোনো একটি দল বা সংগঠন একা নয়— এই লড়াইয়ে শিশু-বৃদ্ধসহ সবাই অংশ নিয়েছেন। সবার ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণেই স্বৈরাচার পতন হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে শুধু ছাত্র বা রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। রিকশাচালক, ভ্যানচালক, শ্রমিক, কৃষক— সবার মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।”
তরুণদের ঘিরেই নতুন বাংলাদেশ
“তরুণ প্রজন্মের দিকে তাকিয়ে আছে পুরো দেশ,” মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, “তাদের হাত ধরেই সোনার বাংলাদেশ গড়তে হবে। কিন্তু দুঃখ হয়, জোর গলায় বলতে পারছি না যে— আমরা একটি নতুন, ন্যায্য বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারছি।”
খালেদা জিয়াকে নিয়ে লেখালেখি হয় না কেন?
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “সবাই লিখছেন, কিন্তু দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে সেভাবে কেউ লিখছেন না। সাংবাদিক ভাইয়েরা কালোকে কালো, আর সাদাকে সাদা বলতে শিখুন।”
জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা
তিনি জানান, “২০২৪ সালের জুলাইয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের গুম, হত্যা ও গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিবি অফিসে নিয়ে করা হয়েছে নির্যাতন। যুবদলের শহীদ ৭৯ জন, ছাত্রদলের ১৪২ জন— এদের অবদান ভুলে গেলে চলবে না।”
শেষে তিনি বলেন, “১৫ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন আমাদের নেতাকর্মীরা। অথচ তার পলায়নের পরও এখন পর্যন্ত কেন হত্যার বিচার শুরু হয়নি?”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন